ন্যাটো সদস্যদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক নানা অস্ত্র পেয়েছে ইউক্রেন । এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা। যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া ন্যাটোর সদস্যদেশগুলো রাশিয়ার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করতে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়েছে ইউক্রেনকে ।
২০২২ সালের ইউক্রেনে অভিযান শুরু করেছিল রাশিয়া। ওই অভিযান রুখে দিতে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে বড় সহায়তা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দেওয়া জ্যাভলিন, এনলসহ ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রগুলো।
এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ন্যাটোর কোনো সদস্যদেশ ইউক্রেনকে এফ–১৬ যুদ্ধবিমান দিতে চাইলে আপত্তি নেই তাদের। এই যুদ্ধবিমান যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এরই মধ্যে যুদ্ধবিমানটি চালানোর জন্য ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ন্যাটো দেশগুলো।
তবে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, ওয়াশিংটন মনে করে এই অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে পশ্চিমারা। একই কারণে ইউক্রেনে সেনাসদস্য মোতায়েনের পথে হাঁটেনি ন্যাটো দেশগুলো।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা কী
রাশিয়াকে ঠেকাতে নতুন একটি পরিকল্পনার বিষয়ে রাজি হয়েছেন ন্যাটোর কমান্ডাররা। আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক, মধ্য ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগর—এই তিন অঞ্চলে রাশিয়া হামলা চালালে ন্যাটো কী করবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই পরিকল্পনায়।
ন্যাটো জোটের হাতে এই মুহূর্তে ৪০ হাজার সেনা রয়েছে, যাঁদের স্বল্প সময়ের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া যাবে। নতুন পরিকল্পনায় আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তিন লাখ সেনাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে একটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ন্যাটো চাচ্ছে, সদস্যদেশগুলো যেন তাদের সামরিক সরঞ্জাম আধুনিকায়ন করে, আরও গোলাবারুদ মজুত করে এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউটের ম্যালকম চালমার্সের মতে, গত শতকে স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পর এটাই ন্যাটোর সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষামূলক পরিকল্পনা। তিনি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে বড় কোনো যুদ্ধের হুমকি বলতে গেলে আর ছিল না। তবে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল ও বর্তমানের ইউক্রেন যুদ্ধ এটাই বোঝাচ্ছে, সেই হুমকি আবার ফিরে এসেছে। বিশেষ করে বাল্টিক দেশগুলো বড় হুমকির মুখে রয়েছে।’